ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলায় তিন চিহ্নিত অপরাধীকে এলাকাবাসী আটক করে গণধোলাই দিয়ে নবাবগঞ্জ থানা পুলিশে সোপর্দ করেছেন। শনিবার দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে। আটককৃতরা হলো- দোহার উপজেলার গোড়াবন এলাকার মৃত শেখ ওমর আলীর ছেলে শেখ আলমগীর(৪০), চর-কুসুমহাটি এলাকার শেখ শুকুর আলীর ছেলে শেখ মিন্টু(৪২) ও নারিশা পশ্চিমচর এলাকার আব্দুল হক বেপারীর ছেলে সোহেল বেপারী(২৮)। এজাহার সূত্রে জানা যায়, শনিবার দিবাগত রাত ৪ টার দিকে নবাবগঞ্জ উপজেলার কলাকোপা ইউনিয়নের বড় রাজপাড়া মধ্যহাটি গ্রামের আসমত আলীর মুদির দোকানের সামনে গ্রাম পাহাড়াদার একটি ব্যাটারীচালিত অটোগাড়ি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বিষয়টি স্থানীয় মসজিদে জানান। এ সময়ে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে চোর-ডাকাতদের প্রতিরোধ করতে আহ্বান জানানো হয়। মাইকে ঘোষণা পেয়ে স্থানীয়রা শেখ আলমগীর, শেখ মিন্টু ও সোহেল বেপারী নামে তিনজনকে আটক করে গণধোলাই দেন এবং এদের দখল থেকে একটি ব্যাটারী চালিত অটোগাড়ি জব্দ করেন। পরে বিষয়টি নবাবগঞ্জ থানা পুলিশকে জানালে পুলিশ আহতদের উদ্ধার করে নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে থানা হেফাজতে আনেন। অপরদিকে, মসজিদের মাইকের ঘোষণায় জানতে পেরে উপজেলার কলাকোপা ইউনিয়নের পানালিয়া গ্রামের উদ্ধার হওয়া ব্যাটারীচালীত অটোগাড়ির মালিক আব্দুল রাজ্জাক(৪৪) ঘটনাস্থলে এসে আটক গাড়িটি দেখে তার নিজ গাড়ী বলে চিহ্নিত করেন। এরপর বিষয়টি নবাবগঞ্জ থানাকে জানালে ধৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করেন বিলকিসের গ্যারেজের তালা ভেঙ্গে গাড়িটি তারা চুরি করেছে। এ বিষয়ে কলাকোপা ইউনিয়নের পানালিয়া গ্রামের আব্দুস সামাদের ছেলে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ব্যাটারী চালিত অটোগাড়ি চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করি। গাড়িটির বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। শনিবার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে প্রতিদিনের ন্যায় ইজিবাইক চালানো শেষে বিলকিসের বসতবাড়ীর গ্যারেজে ইজিবাইকটি চার্জে লাগিয়ে রাতের খাবার শেষে ঘুমিয়ে পড়ি। শেষ রাতে মসজিদের মাইকের মাধ্যমে জানতে পারি এলাকায় ডাকাত পড়েছে। এর কিছুক্ষণ পর মাইকে জানতে পারি পাশাপাশি গ্রামের বড় রাজপাড়া এলাকার স্থানীয়রা ডাকাত সন্দেহে তিনজনকে একটি অটো গাড়িসহ আটক করেছে। এমন সংবাদের ভিত্তিত্বে গ্যারেজে গিয়ে গাড়ি দেখতে না পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। সেখানে গাড়িটি দেখতে পেয়ে চিনতে পারি এবং গাড়িটির মালিকানা দাবি করি। এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী এস আই লিয়াকত খান জানান, ধৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা চুরির কথা স্বীকার করে। ইজিবাইকসহ আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। দোহার সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. আশরাফুল আলম জানান, আটককৃতরা পেশাদার অপরাধী। এদের তিন জনের নামে চুরি, ডাকাতি, মাদক ও হত্যাসহ মোট ১২টি মামলা রয়েছে। শেখ আলমগীরের নামে ৩টি, শেখ মিন্টুর নামে ৬টি ও সোহেল বেপারীর নামে ৩টি সহ মোট ১২টি মামলার চার্জশীট ও এজাহারভুক্ত আসামী এরা। রোববার গ্রেফতারকৃতদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।